গুগলে কর্মরত প্রথম বাংলাদেশী শিশির খান এক
দশকেরও বেশি সময় ধরে গুগলে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি গুগলের টিপিএম ও
রিলিজ ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এরপর আরও অনেকেই যোগ দিয়েছেন
গুগলে। এই তালিকায় আরও যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশের ৭ তরুণের নাম। এরই মধ্যে ৩
জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশের ৭ জন তরুণ আগামী ৫ অক্টোবরে গুগলে
সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দেবেন। গুগলের রিকুটিং স্পেশালিষ্ট বিজয়া
কুমার কেএস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইতোমধ্যেই গুগলে নিয়োগ পাওয়া ৩ জন
বাংলাদেশি হলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিইসি বিভাগের সাদিয়া
নাহরিন ও সাকিব সাফায়েত এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিন্দ মজুমদার।
এদিকে বুধবার বেসিস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের
(বিআইটিএম) উদ্যোগে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বেসিস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত
টেক আড্ডায় যোগ দিলেন বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলে কর্মরত
প্রথম বাংলাদেশী শিশির খান। আড্ডায় এক দশক ধরে গুগলে চাকরির অভিজ্ঞতা
বিনিময় করেন তিনি।
জানালেন, প্রোগ্রামিং ভাষাটা ভালোভাবে দখলে
আনতে পাড়লে এখানে কাজ পাওয়া কঠিন কিছু নয়। তুলে ধরেন তার দীর্ঘ
ক্যারিয়ারের নানা অভিজ্ঞতার কথা। বিআইটিএমের উপদেষ্টা ও বেসিসের সাবেক
সভাপতি একেএম ফাহিম মাশরুরের সঞ্চালনায় আড্ডায় অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে
শতাধিক পেশাজীবী ও শিক্ষার্থী অংশ নেন। এছাড়া কিভাবে বাজারের চাহিদানুযায়ী
সফটওয়্যার ডেভেলপ করা যায় এবং টেকনোলজি ইকো-সিস্টেম পরিবর্তন করা যায়, সেসব
বিষয়ে আলোচনা হয়। উদ্ভাবনকে কেন এত গুরুত্ব দেয় গুগল? এমন প্রশ্নের জবাবে
শিশির বলেন, সার্চ নিয়ে পড়ে থাকলে কবেই পথে বসে যেত প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু
এটি উদ্ভাবনকে গুরুত্ব দেয়ায় অবলীলায় অন্যদের ছাড়িয়ে গেছে।
উদ্ভাবন নিয়ে গুগলের আগ্রহটা বোঝাতে গিয়ে
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি পল নামের এক কর্মকর্তার কাছ থেকে জিমেইলের
পোর্টফোলিও পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তাতে বড় অংকের ডলার বিনিয়োগ করে। এমনকি তাকে
(পল) ফাউন্ডার অ্যাওয়ার্ড হিসেবে বড় অংকের সম্মানী দেয়া হয়। শিশির আরও
বলেন, গুগল মূলত পাগলামিতে বিশ্বাস করে। এই পাগলামির অংশ হিসেবেই বাজারে
আসছে গুগল কার।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ৩০ হাজার মানুষ
সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। তাই প্রযুক্তি জায়ান্ট এই প্রতিষ্ঠান চিন্তা করল,
যদি ড্রাইভারহীন গাড়ি আনা যায়, তবে দুর্ঘটনার হার কমে যাবে। ব্যস, এই
প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গেল! সার্চ ইঞ্জিন ব্যবসায় বিংকে গুগলের
প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন শিশির। তার মতে, এটি অনেক টাকার কো¤পানি।
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে তারাও বিনিয়োগ করতে পিছপা হয় না।
এক আইটি পেশাজীবী প্রশ্ন করেন, কিভাবে
গুগলের নজরে আসা যায়? জবাবে শিশির বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা একটা
ল্যাঙ্গুয়েজ শিখেই নিজেকে প্রতিভাবান ভাবতে শুরু করি। কিন্তু এটা কোনো
কাজের ভাবনা নয়। তারাই নজরে আসে যারা গ্রামার নিয়ে খেলতে পারে। তবে গুগলের
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এলে এখন থেকে তা বেসিসের মাধ্যমে সবাইকে জানাবেন বলেও
আশ্বাস দেন তিনি। গুগলে ইন্টার্নি করতে হলে কি করতে হবে? এমন প্রশ্নের
উত্তরে তিনি বলেন, প্রথমত ছাত্র হতে হবে। কোডিং ও ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্ভাবনে
অভিজ্ঞতা থাকলেও ইন্টার্নি করার সুযোগ থাকে। ইন্টার্নি নেয়া হবে কিনা তা
জানতে গুগলের জব ওয়েবসাইটে খোঁজ রাখতে হবে বলেও জানান তিনি।
ConversionConversion EmoticonEmoticon